বাংলাদেশের বিশৃঙ্খল, বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একজন হতদরিদ্র মানুষ একান্ত প্রয়োজনীয় মানসম্মত চিকিৎসা পাবে, এ এক অলীক স্বপ্ন। প্রতি বছর দেশে ৫২ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ছে নিজের পকেট থেকে স্বাস্থ্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে। জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন স্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ যে শুধু চিকিৎসা পেতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে তা নয়, আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত থাকছে। সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা এখন বৈশ্বিক স্বাস্থ্যনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি। প্রতিটি নাগরিকের মানসম্মত, নিরাপদ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত থাকবে তার আর্থিক অসামর্থ্যতার ঊর্ধ্বে। স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে কারও আর্থিক বিপর্যয় ঘটবে না। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (SDG) বাস্তবায়নে জনগোষ্ঠীকে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার (UHC) আওতায় আনতে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ। কোন পথে অর্জিত হবে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা?
প্রাথমিক চিকিৎসা হলো সামান্য বা গুরুতর অসুস্থতা বা আঘাতজনিত যেকোনো ব্যক্তিকে জীবন রক্ষা করতে, অবস্থার অবনতি থেকে বাঁচতে বা পুনরুদ্ধারের জন্য যত্নসহকারে দেওয়া প্রথম বা তাৎক্ষণিক সহায়তা। এটির মধ্যে পেশাদার চিকিৎসা সহায়তা পাওয়ার আগে গুরুতর অবস্থায় প্রাথমিক হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন: ছোটখাটো অবস্থার চিকিৎসা দেওয়া, প্লাস্টার বা ব্যান্ডেজ করা, একজন আহত রোগীর রক্তপাত বন্ধ করার উপায় প্রয়োগ করে জীবন বাঁচানো, পাশাপাশি পেশাদার চিকিৎসাসহায়তা পাওয়ার আগে কার্ডিওপলমোনারি পুনর্বাসন (সিপিআর) সম্পাদন করা। সুতরাং গুরুতর পরিস্থিতিতে যত্ন নেওয়ার জন্য, খারাপ থেকে আরও খারাপ হওয়া বা চিকিৎসাসহায়তা না আসা অবধি সুস্থ্ রাখার জন্য প্রত্যেকের কিছুটা প্রাথমিক জ্ঞান থাকা ভালো।
এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গড়ে তোলা হয়েছে শরণখোলা সকারি কলেজ মেডিকেল ইউনিট। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে আহত ছাত্র-ছাত্রীর জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, প্রাথমিক চিকিৎসা করে আহত ছাত্র-ছাত্রীর অবস্থা উন্নত করা ও সংক্রমণ এড়ানোর চেষ্টা করা এবং বড় কোনো দুর্ঘটনায় বা জরুরি মুহূর্তে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো, প্রাথমিক চিকিৎসা করে আহত ছাত্র-ছাত্রীর অবস্থা উন্নত করতে বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করা এবং প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা।
তৃতীয় লক্ষ্যটি হলো, বড় কোনো দুর্ঘটনায় বা জরুরি মুহূর্তে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত কাজ করার দক্ষতা জীবন বাঁচাতে এবং আঘাতের প্রভাব কমাতে সহায়তা করতে পারে।
-----------0----------